অনেকেই প্রশ্ন করেন, ঝালমসলার খাবার খেলে কি শিশুর পেট ব্যথা হয়? নবজাত শিশুর খাবার মানেই মায়ের বুকের দুধ। জন্মের পর নবজাত শিশুকে মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কোনো খাবার দেয়া উচিত নয়। এমনকি পানিও নয় অন্তত তিন-চার মাস বয়স পর্যন্ত। এ সময়ে শিশুর পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য মায়ের দুধই যথেষ্ট।
শিশুকে মায়ের দুধ না খাওয়ালে শিশুর নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু কুসংস্কার ও অজ্ঞতাবশত আমাদের দেশের মায়েরা নানা অজুহাতে মায়ের দুধ থেকে শিশুকে বঞ্চিত করে থাকে। মায়ের দুধ নিয়ে পুরনো দিনের কিছু ভুল ধারণা এখনো আমাদের মাঝে প্রচলিত আছে।
যেমন অনেকেই মনে করেন, সন্তান হওয়ার পর মাকে ঝালমসলা দিয়ে খাবার দেয়া যাবে না। ঝালমসলা দিয়ে খাবার খাওয়া মায়ের বুকের দুধ পান করলে শিশুর নাকি পেট ব্যথা হবে। আবার অনেকের ধারণা, ঘি ও সুজি খেলে মায়ের বুকে বেশি দুধ হবে-এ সবই ভুল ধারণা।
মা ঝালমসলার খাবার খেলে তা বুকের দুধের সঙ্গে বেরিয়ে আসবে এবং তাতে শিশুর পেট ব্যথা করবে-এ ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কাজেই মা ঝালমসলার খাবার খেলে মায়ের দুধ পান করে শিশুর পেট ব্যথা হবে-এ ধারণা একবারেই অমূলক।

তবে কিছু ওষুধপথ্য আছে যেগুলো সেবনের সময় মা যদি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে চান তবে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। তবে হ্যাঁ, কারো কারো বেলায় এই বিষয়টি মিলে যেতে পারে কাকতালীয়ভাবে।
কিন্তু তখন যদি মা নিয়মিত ঝালমসলা দিয়ে খাবার খেতে থাকেন এবং শিশুকেও বুকের দুধ দিতে থাকেন তাহলে হয়তো দেখা যাবে একসময় শিশুটি আর পেট ব্যথায় কাঁদছে না।
আর যদি এর পরও শিশু কাঁদতে থাকে তবে বুঝতে হবে শিশু হয়তো ক্ষুধায় কাঁদছে কিংবা অন্য কোনো কারণে কাঁদছে। নবজাত শিশুদের ইভেনিং কলিক বা সান্ধ্যকালীন পেটব্যথা বলে একটা সমস্যা হয়। পেটব্যথায় সন্ধ্যাবেলা অনেকে কাঁদে। এটি কোনো রোগ নয়। এমনিতেই চলে যায়।
সুতরাং মা ঝালমসলা, চাইনিজ-দেশী যে কোনো খাবারই পছন্দ হলে খেতে পারেন। এবং একইসময়ে বুকের দুধও খাওয়াতে পারেন। আর এ দুটি কাজই যদি একাধারে করা হয় তাহলে দেখা যাবে শিশুর আর কোনো সমস্যাই হচ্ছে না। কাজেই পছন্দসই খাবার না দিয়ে মাকে দুর্বল করবেন না, কারণ দুর্বল মা শিশুকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বুকের দুধ দিতে অসমর্থ হবেন।