মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার উপায় রয়েছে। মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক এখন একটি প্রধান সমস্যা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক কিশোরী বা তরুণীর নিয়মিত ও সময় মতো পিরিয়ড বা মাসিক হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক একটি সমস্যা হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার শারীরিক কোনো সমস্যা আছে। এ সময়ে আপনাকে এটির সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং নজর দিতে হবে।

অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ
অনেক সময় অতিরিক্ত কাজের চাপ, ওজন হ্রাস, থাইরয়েড সমস্যা, মানসিক চাপ, ওভারির সমস্যা, অতরিক্ত ব্যায়াম, হরমোন ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি কারণে সাধারণত অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
পিরিয়ড না হলে করনীয়
অনিয়মিত মাসিক হলে নারীরা দুশ্চিন্তা শুরু করেন। সেটি আরও একটি ক্ষতির কারণ। হঠাৎ আপনার মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়লে সেটিকে নিয়মিত করার উপায়ও আছে। চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন-
অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার উপায়
অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
১. ব্যায়াম
অনেক নারীরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাদের মাসিকের কোনো সমস্যা থাকে না। নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম আছে, সেগুলো করলে মাসিক নিয়মিত হতে পারে। ব্যায়ামের কারণে পেশি বাঁধা পেয়ে থাকে, যার কারণে পেশি সংকোচন শুরু করে, শরীরে রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দিয়ে থাকে। ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার পর ব্যায়াম করলে পরবর্তী সময়ে সঠিক সময়ে মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২. টকজাতীয় ফল
টকজাতীয় ফল যেমন-তেতুল, মাল্টা, জলপাই মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করে থাকে। পানিতে চিনি মিশিয়ে তেঁতুল এক ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এর পর এর সঙ্গে লবণ, চিনি ও জিরা গুঁড়ো মিশিয়ে নিনি। এটি দিনে দুবার পান করুন। এটি আপনার অনিয়মিত মাসিককে নিয়মিত করতে সাহায্য করবে।
৩. আদা
মাসিকের চক্রকে নিয়মিত করতে আদা বেশ কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। ১ কাপ পানিতে ১/২ চামচ আদা কুচি দিয়ে ৫-৭ মিনিট সিদ্ধ করে পানিতে মিশিয়ে নিন। খাবার পর তিনবেলা পান করুন। নিয়মিত এক মাস এটি পান করুন।
৪. তিল
তিল একটি খুবই উপকারী উপাদান। এটি আপনার অনিয়িমিত মাসিককে নিয়মিত করতে সাহায্য করবে। তিলের উপাদান হরমোন উৎপাদন করে থাকে। অল্প পরিমাণের তিল ভেজে গুঁড়ো করে নিন। এর সঙ্গে এক চামচ গুড় মিশিয়ে নিন। এটি রোজ খালি পেটে এক চা চামচ করে খান। দেখবেন উপকার পাচ্ছেন।
৫. কাঁচা পেপে
কাঁচা পেপে পিরিয়ড রেগুলেশন-এ সাহায্য করে। এটি জরায়ুর মাসল ফাইবার কন্ট্রাকশন-এ সাহায্য করে। পর পর কয়েক মাস নিয়মিত কাঁচা পেপের রস খেলে পিরিয়ড নিয়মিত হয়, তবে পিরিয়ড চলাকালীন এটি না খাওয়াই ভালো। পিরিয়ড নিয়মিত করা ছাড়াও কাঁচা পেপে হজমে সাহায্য করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং ত্বক মসৃণ রাখে।
৬. কাঁচা হলুদ
হলুদ মসলা জাতীয় দ্রব্য হলেও প্রাচীন কাল থেকেই চিকিৎসা শাস্ত্রে এর ব্যবহার নানামুখী। এটি পিরিয়ড নিয়মিত করতে এবং শরীরে হরমোন ব্যালান্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা হলুদ জরায়ুর মাংসপেশী সঙ্কোচন-প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং এর এ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ পিরিয়ড-এর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ দুধে চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ হলুদ নিয়ে মধু বা গুড় দিয়ে কিছুদিন খেয়ে দেখুন, পরিবর্তন নিজেই টের পাবেন।
৭. আপেল সাইডার ভিনেগার
খাবার খাওয়ার আগে ২ টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার পানিতে মিশিয়ে পান করুন।এটি রক্তের ইনসুলিন ও ব্লাড সুগার অনেকটা কমিয়ে থাকে, যা মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করবে।
৮. স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন
যেসব নারীর মেনোপেজের বয়স হয়ে এসেছে, তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আরও বেশি জরুরি। কারণ মেনোপজের পর পরই অনেক রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন- আজীবন যৌবন ধরে রাখার উপায় এবং যে খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন
তবে প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে অনিয়মিত মাসিক হলে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। পিরিয়ডের দিকে নজর রাখন। প্রতিবার পিরিয়ড হওয়ার মাঝে ৩৫ দিনের বেশি বিরতি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।