অশ্বত্থ গাছ বা পবিত্র ডুমুর হল ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় ডুমুরের একটি প্রজাতি এবং ইন্দোচীন যেটি মোরাসি, ডুমুর বা তুঁত পরিবারের অন্তর্গত। ২ এটি বোধি গাছ, পিপুল গাছ, পিপল গাছ, পিপলা গাছ বা অশ্বত্থ গাছ (ভারত ও নেপালে) নামেও পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত চারটি প্রধান ধর্মের মধ্যে পবিত্র ডুমুরের একটি ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করা হয়: হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, শিখ ধর্ম এবং জৈন ধর্ম। হিন্দু এবং জৈন তপস্বীরা প্রজাতিটিকে পবিত্র বলে মনে করেন এবং প্রায়শই এর নীচে ধ্যান করেন। গৌতম বুদ্ধ এই প্রজাতির একটি গাছের নিচে জ্ঞানলাভ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। পবিত্র ডুমুর হল ভারতীয় রাজ্য ওড়িশা, বিহার এবং হরিয়ানার রাজ্য গাছ।
- প্রচলিত নাম: অশ্বত্থ
- ইংরেজি নাম: People Tree, Bo-tree, Bodhi tree, Holy tree
- গোত্র: Moraceae
- বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus religiosa L.

অশ্বত্থ গাছ পরিচিতি
অশ্বত্থ বৃক্ষ বটবৃক্ষের মতোই বড়। পাতাগুলো ছোট পান পাতার মতো, যার অগ্রভাগে লম্বা লেজ থাকে। বট এবং অশ্বত্থ এ দুটি গাছের মূল পার্থক্য হলো, বটপাতার অগ্রভাগ গোল, অশ্বত্থের অগ্রভাগ সুচালো। অশ্বত্থের ফুল ডুমুরের মতোই, অর্থাৎ বাইরে থেকে দেখা যায় না। এর ফলগুলো বটের মতোই তবে পাকলে লাল নয় বেগুনি রং ধারণ করে। অশ্বত্থে ঝুরি থাকে না। এই গাছ শীতে পাতা ঝরায়,
অশ্বত্থ গাছের ভেষজ গুণাগুণ
এ বৃক্ষ কষায় রসযুক্ত, দুষ্পাচ্য, বর্ণ প্রসাদক, শীতবীর্য কফাপহারক। এ বৃক্ষের ফল, পাতা ও ছাল ব্রণ, পিত্তদোষ, যোনিদোষ ও রক্তদোষনাশক।
অশ্বত্থ গাছের ব্যবহার
অশ্বত্থ গাছের ফল, পাতা, গাছের ছাল, পাতার কুঁড়ি বা মুকুল ওষুধরূপে ব্যবহৃত হয়। অশ্বত্থ গুরু, কষায় রসযুক্ত, দুষ্পাচ্য, বর্ণ প্রসাদক, শীতবীর্য এবং কফ-সংহারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
- অশ্বত্থ গাছের ছালের ক্বাথ ৫ তোলা পরিমাণ মধুসহ সেব করলে বাতরক্তে অথবা রক্তদোষে প্রভূত উপকার পাওয়া যায়।
- অশ্বত্থ মূলের ছাল এক ছটাক পরিমাণ আধা সের পানিতে সেদ্ধ করে আধ পোয়া থাকতে নামিয়ে তারপর ঐ ক্বাথ তিন তোলা মধুসহ সেবন করলে এক সপ্তাহের মধ্যে পিত্তরোগ আরোগ্য হয়।
- ফোড়া ওঠা মাত্র অশ্বত্থ বৃক্ষের পাতা ফোড়ার উপর বসিয়ে বেঁধে দিলে ফোড়া বসে যায়।
- অশ্বত্থের শুষ্ক ছাল আগুনে পুড়িয়ে জ্বলন্ত অবস্থায় তা পাত্রস্থিত পানিতে নিক্ষেপ করে পরে ওই পানি ছেঁকে অল্প পরিমাণে রোগীকে সেব করালে প্রবল তৃষ্ণা ও বমিভাব দূর হয়ে যায়।
- অশ্বত্থ গাছের কলি ও মূলের ছাল ক্বাথ এ ছটাক পরিমাণ মিছরি চূর্ণ ও মধুসহ সেব করলে ধাতু দৌর্বল্যে বিশেষ সুফল পাওয়া যায়।
- অশ্বত্থের ক্বাথ এক ছটাক আতপ চাল ধুয়ে পানিসহ সেবন করলে যোনিগত দোষে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
- অশ্বত্থ গাছের ছাল পুড়িয়ে চূর্ণ করে ক্ষতস্থানে বা দগ্ধ ক্ষতে পোড়া ঘায়ে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।