স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনাকে কিছু উপায় অবলম্বন করা উচিত। কথায় আছে স্বাস্থ্য সুখের মূল। সেই স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে তাহলে মনও ভালো থাকবে না। তাই স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
শরীর সুস্থ রাখার উপায়
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আমরা কত কিছূই না করে থাকি। শরীর সুস্থ্য রাখার নাম স্বাস্থ্য। শরীর সুস্থ রাখতে হলে চাই উপযুক্ত নিয়মবিধি মেনে চলা এবং স্বাস্থ্যগঠনের উপযোগী খাদ্যগ্রহণ করা। মানুষের শরীরে বিভিন্ন দূষিত জীবাণু নানাভাবে প্রবেশ করে রোগ-ব্যাধি সৃষ্টি করে। আর তার জন্য শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং শরীর সবল ও সতেজ থাকে না। এই কারণেই মানুষ ক্ষীণ ও অল্পায়ু হয়।

তাই স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য যেসব নিয়মবিধি অবশ্য মেনে চলতে হবে ও বিভিন্ন খাদ্যগ্রহণ করতে হবে, সে সম্বন্ধে এখন আলোচনা করা হচ্ছে।
শরীর সুস্থ রাখার প্রধান এবং সহজ উপায়গুলো-
- শরীর বা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় কোনো ফাঁকা জায়গায় কিছু সময় বেড়ানো ও মুক্ত বাতাস সেবন শরীরের পক্ষে বিশেষ উপকারী। খুব ভোরে অর্থাৎ সূর্য্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে। প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি ঘুমানো উচিত নয়। ঘুম কম বা বেশী হলে বেশ ক্ষতিকর। দিবানিদ্রা ত্যাগ করা উচিত।
- যে বাড়িতে বাস করবেন সেখানে যেন প্রচুর আলো-বাতাস আসতে পারে। আলো-বাতাস সবসময় মানুষের পক্ষে একান্ত প্রয়োজনীয়। বাড়ির আশেপাশে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, যাতে বায়ু দূষিত না হয় স্যাঁতস্যাঁতে আলো-বাতাসহীন ঘরে বাস করবেন না, তাতে নানা রোগ আক্রমণ করতে পারে। পোশাক-পরিচ্ছদ, বিছানা ও ব্যবহার্য জিনিষপত্র পরিষ্কার রাখতে হবে। তাতে মন সবসময় প্রফুল্ল থাকবে।
- দুপুরে খাওয়ার পর অন্ততঃ আধঘন্টা বিশ্রাম দরকার। রাত্রে খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়া অনুচিত। রাত্রি ন’টা-দশটার মধ্যে শুয়ে পড়া উচিত। রাত্রে খাওয়ার পর কিছুটা ভ্রমণ করা দরকার।
- প্রতিদিন স্নান করা উচিত। কোনো ব্যাধি হলে স্নান না করলেও চলবে।
- শ্রম করা শরীরের পক্ষে উপকারী। তবে সাত-আট ঘণ্টার বেশি শ্রম করা ভাল নয়। শ্রমের জন্য খাদ্য ও বিশ্রাম প্রয়োজন। যাঁরা মানসিক পরিশ্রম বেশি করেন, তাঁদের নিয়মিত ভ্রমণ, সাঁতার কাটা ইত্যাদি। কৈশোরে ও যৌবনে উপযুক্ত ব্যায়াম করতে হয়। তবে প্রৌঢ়ত্বে অর্থাৎ চল্লিশ বছর বয়সের পর বেশি ব্যায়াম করা ক্ষতিকর। এই বয়সে বেড়ানো বা ভ্রমণ করাই হলো শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম।
- অমিতাচার, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, রাত্রি জাগরণ, মদ, ধূমপান, জর্দা, পান ইত্যাদি শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
- সকাল ও সন্ধ্যায় পায়খানা হওয়া দরকার। অন্ততঃ প্রতিদিন একবার পরিষ্কারভাবে পায়খানা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় তাহলে যেসব খাদ্য খেলে পায়খানা পরিষ্কার হয় যেমন-ফলমূল, শাকবব্জী, বেল প্রভৃতি খাদ্য উপযুক্ত মল তৈরি করে। সেইসব খাদ্য খেতে হবে। নিয়মিত জোলাপ ব্যবহার করা উচিত নয়।
- পানীয় জল যেন পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ হয়। যে পাত্রে জল থাকবে তার মুখ যেনব সব সময় কোনো পাত্র দিয়ে ঢাকা থাকে।
- সব সময় মন হাল্কা রাখতে হবে। মন খারাপ করে বসে থাকতে নেই। তাতে শরীরের ক্ষতি হয়। সেজন্য প্রতিদিন কিছু সময় খেলাধুলা, গান-বাজনা, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মিলেমিশে কথাবার্তা বলা দরকার।
- মাঝে মাঝে দু’একদিন উপবাসে থাকা বা হাল্কা খাবার খেয়ে দিন কাটালে অনেক উপকার হয়। স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া ভাল। উপরন্তু, অনিয়মিত আহার শরীরের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকারক।
- স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বৃদ্ধ বয়সে খাদ্যের পরিমাণ অবশ্যই কমানো দরকার। ওই বয়সে গুরুভোজন করলে বহুমুত্র বা ব্লাডপ্রেসার হয়ে থাকে।