হঠাৎ পেট ব্যথা কমানোর জন্য অনেক ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যে সমস্ত রোগে মানুষ বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ বেশি ভোগে তার মধ্যে পেটের রোগ অন্যতম। পরিবেশ, জল, খাওয়া-দাওয়া, পাচনতন্ত্রের গোলযোগ ইত্যাদি নানা কারণে পেটের রোগ হয়। নিচে কিছু পেটের রোগের চিকিৎসার কথা বলা হচ্ছে।

পেট ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
যোয়ানের চূর্ণ ৬ ভাগ এবং বিট লবণ গুঁড়ো ১ ভাগ নিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই চূর্ণ আধ চামচ বা ২ গ্রাম একটু গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পেট ব্যথা সেরে যায়। ছোটদের আধ মাত্রা অর্থাৎ ১ গ্রাম পরিমাণ দেবেন। এতে পেট ফাঁপা, পেটে শক্ত অনুভূত হওয়া, পেটের গ্যাস ভালো হয়ে যায়।
বিশেষ ব্যবহার ঃ সাধারণ অর্থাৎ ঠান্ডা জলে এই চূর্ণ মিশিয়ে খেলে বদ হজম, অরুচি ও মন্দাগ্নি নষ্ট হয়ে যায়।
ঈষদোষ্ণ জলে গুলে শুধু যোয়ান গুঁড়ো খেলে বদহজম, কালি, পেটের অস্বস্তি, ছোটখাট টিউমার, প্লীহার সমস্যা, শ্লেষ্মা, গ্যাসজনিত সমস্যা দূর হয়। এই চূর্ণ ক্রিমির জন্যও খাওয়া যেতে পারে। এক থেকে ছ’সপ্তাহ খেতে হবে।
শুধু যোয়ানের মধ্যেই চিরতার গুণ (কটুতা), হিং-এর বায়ুনাশক ক্ষমতা এবং গোলমরিচের অগ্নিউদ্দীপক গুণ সমাবিষ্ট থাকে।
শাস্ত্রে আছে ‘একা যয়ানী শতমন্নপাচিকা’-অর্থাৎ স্বয়ং যোয়ানের মধ্যে শত অন্ন পরিপাক করার ক্ষমতা বিদ্যমান। পেটের ব্যথা, পেটে গ্যাস, পেট গুড়গুড়, শূল বেদনা, বমি, ক্রিমি, অর্শ এবং বেশ কিছু সংক্রমণ রোগে যোয়ান বা যোয়ানের চূর্ণ ভালো কাজ করে।
পেট ব্যাথা হলে অমৃতধারার ব্যবহার
অমৃতধারা একটি ভেষজ ওষুধ যা পেটের রোগে অত্যন্ত ফলদায়ক। অমৃতধারার দু’তিন ফোঁটা বাতাসা বা মিছরি বা জলে দিয়ে খেলে পেটের ব্যথা ভালো হয়। যদি প্রথম মাত্রা দিয়ে তেমন সন্তোষজনক কাজ না হয় তাহলে আধ ঘণ্টা পরে আর এক মাত্রা দেবেন। তাতে নিশ্চিত পেট ব্যথার উপশম হবে।
দু’তিন চামচ অমৃতধারা ঠান্ডা জলে দিয়ে প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যে খেলে পায়খানা, আম পড়া, পেট মোচড়ানো, পেট কামড়ানো, পাতলা পায়খানা, খাওয়ার পর-পরই বমি হয়ে যাওয়া, মন্দাগ্নি, অজীর্ণ, বদহজম ইত্যাদিও দূর হয়।
অমৃতধারা ঘরেও তৈরি করতে পারেন
একটি ভালো কর্ক দেওয়া বা ছিপি দেওয়া কাচের শিশি নিয়ে তার মধ্যে উন্নত মানের কর্পূর (ভীমসেনা কর্পূর হলে ভালো), পিপারমেণ্ট (পুদিনার ফুল), যোয়ানের আরক-তিনটে একসঙ্গে (কোনো কেমিস্টের দোকান থেকে) প্রতিটি ৫ গ্রাম করে নিয়ে দশ পনের মিনিট নাড়াতে থাকুন। নাড়াতে নাড়াতে একসময় তা তরল হয়ে যাবে। এবার ঐ শিশি রোদে রেখে দিলে ঐ তরল একেবারে জলের মতো হয়ে যাবে। এই হলো অমৃতধারা। এই অমৃতধারা ঘরে থাকলে নানা রোগে মহৌষধের কাজ করে।